
দিব্যেন্দু গোস্বামী
বীরভূম, পশ্চিমবঙ্গ
গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে রাজ্যের সংস্কৃতি সেই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কিছু মানুষ। মহিলা কি পুরুষ কোন ভেদাভেদ নেই। সকলেই চাই আগামী দিনে হারিয়ে যাওয়া এই সমস্ত শিল্পীদের গান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে। আমাদের এখানে বাউল, টুসু, ভাদু, ভাজই, আলকাপ, পঞ্চরস প্রভৃতি গানের যে চল রয়েছে সেগুলি গত কয়েক বছর আগে পর্যন্ত থাকলেও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই সমস্ত জিনিসগুলি নিয়ে আর কাজ করে না। কারণ হিসাবে অনেকেই মনে করে থাকেন যে এই ধরনের কাজ করলে হয়তো তার মানহানি হতে পারে কিম্বা তার আর্থিক অবস্থা আরো অবনতি করতে পারে। সেই জন্য তারা আর নিজে থেকে এই সমস্ত লোকওশিল্পী রা হারিয়ে যাওয়া বাংলার ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে ভয় পায়। এখন যেন সত্যি আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না চিরাচরিত প্রথা মেনে বেশ কিছু শিশু আজও ধরে রেখেছে এই অমূল্য রতন কে। কিন্তু তা আর কতদিন? অতএব এক কথা বলা যেতেই পারে আর সেই দিন নেই। যেদিন আমরা ভাজই গান শুনতে যেতাম সন্ধ্যা বেলায়। তখন মনে হতো যে সত্যিই গ্রাম বাংলা থেকে আজও হারিয়ে যায়নি এই ভাঁজে গান ভাঁজে মাকে সন্তুষ্ট করার জন্য মাটিতে পুঁতে রাখা হতো বিভিন্ন প্রকারের গলায় যখন ওগুলি গাছ হয়ে বেরিয়ে আসতো তখনই ওইগুলোকে বিসর্জন দেওয়া হতো। হাজার গ্রামগঞ্জে খুঁজলেও সেই ভাবে গান শুনতে পাওয়া যায় না। টুসু গান শুনতে যেতাম গ্রাম বাংলায়। টুসু গানের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে গান করে করে হাতে তুলে দিয়ে ভবিষ্যতের মানুষের কি হতে পারে এবং বর্তমানে মানুষের কি হাল খারাপ না ভালো এই সমস্ত কথায় তারা তুলে ধরতো তাদের ওই সমস্ত গানে কিন্তু আজ আর সেদিন নেই বলতে কোন বাধা নেই আপনি চাইলেও পাবেন না। বাংলার এই সংস্কৃতি জগতের সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বহুরূপী দের তো আর এখন দেখা যায় না। যদিও বহুরূপী নিয়ে একটি সিনেমা তৈরি হয়েছে কয়েক মাস আগে যারা বহুরূপী সম্পর্কে কিছুই জানতো না। তারা হয়তো কিছুটা জানতে পেরেছে এই সিনেমা মারফত। কিন্তু সেই বহুরূপীরা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে সমাজের অলিন্দ থেকে। তাদের একটাই বক্তব্য। আমরা শত চেষ্টা করেও এই শিল্পকে ধরে রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু শিল্পী নেই। যার ফলে এক প্রকার ডুবতে বসেছে এই সমস্ত সংস্কৃতি যা ভারতের সঙ্গে অঙ্গা অঙ্গি ভাবে জড়িত।